শিশুদের কৃমির ঔষধ খাওয়ার নিয়ম লক্ষণ ও ঔষধের নাম জেনে নিন

কৃমি খুবই স্বাভাবিক একটি সমস্যা। কিন্তু অনেক সময় এই স্বাভাবিক কৃমি অস্বাভাবিক হয়ে যেতে পারে। বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে কৃমির সমস্যা বেশি হয়। আমাদের দেশে গুড়া কৃমি, গোল কৃমি ও ফিতা কৃমি শিশুদেরকে বেশি আক্রান্ত করে। তাই শিশুদেরকে নির্দিষ্ট সময় পর কৃমির ঔষধ খাওয়ানো উচিত। তবে এই ঔষধ খাওয়ানোর পূর্বে অবশ্যই ঔষধ খাওয়ানোর নিয়ম জানা দরকার। তাই এই পোস্টটি আমরা শিশুদের কৃমির ঔষধ খাওয়ার নিয়ম, বাচ্চাদের কৃমি হওয়ার লক্ষণ, শিশুদের কৃমির ঔষধ এর নাম ইত্যাদি বিষয় গুলো নিয়ে আলোচনা করেছি। চলুন তাহলে শিশুদের কৃমির ঔষধ খাওয়ার নিয়ম জেনে নেই।

শিশুদের কৃমির ঔষধ খাওয়ার নিয়ম লক্ষণ ও ঔষধের নাম
কৃমিকে আপনি যতটা স্বাভাবিক ভাবছেন এটি কিন্তু ততটাও স্বাভাবিক নয়। ছোট একটি কৃমি মানুষের অন্ত্র থেকে দিনে ০.২ মিলিলিটার রক্ত শুষে নাই। যার ফলে শিশুরা রক্তশূন্যতায় পড়ে। তাই কৃমিকে সাধারণভাবে নেওয়া উচিত হবে না। আর এই ঘটনাটি বেশি হয় শিশুদের ক্ষেত্রে। তাই আমাদের শিশুদের নির্দিষ্ট সময় পর কৃমির ঔষধ খাওয়াতে হবে। এর জন্য আমাদেরকে শিশুদের কৃমির ঔষধ খাওয়ার নিয়ম, বাচ্চাদের কৃমি হওয়ার লক্ষণ ইত্যাদি সব বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে হবে। যা আপনারা এই পোস্টটি থেকে জানতে পারবেন। তাই মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

ভূমিকা

বর্তমানে বাংলাদেশের শিশুদের জন্য একটি বড় সমস্যা হলো কৃমি। কৃমি মূলত দূষিত ও অপরিচ্ছন্ন খাদ্যদ্রব্য, মলমূত্র এবং দূষিত মাটি থেকে ছড়ায়। এছাড়াও আরও বিভিন্ন কারণে কৃমি শিশুদের আক্রান্ত করতে পারে যেমন অস্বাস্থ্যকর স্যানিটেশন ব্যবহার করা, বড় বড় নখ রাখা, শৌচাগার শেষে সাবান দিয়ে হাত না ধোয়া, কাঁচা ফলমূল না ধুয়ে খাওয়া, দূষিত পানি পান করা, অপরিচ্ছন্ন গৃহস্থলী ইত্যাদি সব কারণে শিশুদের শরীরে কৃমি হতে পারে। ইদানিং আমাদের দেশে গুড়া কৃমি, ফিতা কৃমি ও গোল কৃমির প্রাদুর্ভাব বেশি দেখা যাচ্ছে। 

তবে এই কৃমি যে শুধু শিশুদেরকে আক্রান্ত করে তা কিন্তু নয়। বড়দেরও এই কৃমি হতে পারে। তাই একটি নির্দিষ্ট সময় পর পর কৃমির ঔষধ সেবন করা উচিত। হোক সেটা বড় অথবা শিশুদের ক্ষেত্রে। সবারই এই ঔষধ একটি নির্দিষ্ট সময় পর পর সেবন করা উচিত। এক্ষেত্রে কৃমির ওষুধ খাওয়ার কিছু নিয়ম রয়েছে। আবার শিশুদের কৃমির ঔষধ খাওয়ার নিয়ম রয়েছে যেগুলো জানা প্রয়োজন। আবার আসলেই শিশুদের কৃমি হয়েছে কিনা তা সনাক্ত কিভাবে করব।

আরো পড়ুুনঃ পাইলস এর ফোলা কমানোর উপায়  

এর জন্য আমাদের বাচ্চাদের কৃমি হওয়ার লক্ষণ গুলো সম্পর্কে জানা উচিত। তাই এই পোস্টটিতে আমরা শিশুদের কৃমির ঔষধ খাওয়ার নিয়ম, শিশুদের কৃমির ঔষধ এর নাম, বাচ্চাদের কৃমি হওয়ার লক্ষণ ইত্যাদি সব বিষয়গুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। তাই আপনি এই বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে চাইলে অবশ্যই এই পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন। আশা করি উপকৃত হবেন।

বাচ্চাদের কৃমি হওয়ার লক্ষণ

কৃমি অনেক পুরাতন একটি পেটের সমস্যা। এই সমস্যাটি যে কোন বয়সের মানুষের হতে পারে। তবে বাচ্চাদের বেশি হয়। কৃমি এক ধরনের পরজীবী প্রাণী যা পানির মাধ্যমে, খাবারের মাধ্যমে বা পায়ের পাতা ভেদ করে শরীরের ভিতরে প্রবেশ করে। এটি বিভিন্ন কারণে হতে পারে। যেমন অস্বাস্থ্যকর টয়লেট ব্যবহার করা, অপরিষ্কার ঘরবাড়ি, দূষিত পানি ব্যবহার করা, টয়লেট করে সাবান দিয়ে হাত পরিষ্কার না করা আরো অনেক কারণ রয়েছে যেগুলোর কারণে কৃমি হতে পারে।

অনেক সময় দেখবেন বাচ্চারা এসে বলে যে তাদের পেট ব্যথা করছে, অনেক সময় পেটব্যথার সাথে চুলকানি হচ্ছে ইত্যাদি সমস্যাগুলোর কথা বলে। যেগুলো কৃমি হওয়ার লক্ষণ। এছাড়াও বাচ্চাদের কৃমি হওয়ার আরো অনেক লক্ষণ রয়েছে। যেগুলো সম্পর্কে জানা থাকলে সহজেই আপনি কৃমি প্রতিকার করতে পারবেন। চলুন তাহলে বাচ্চাদের কৃমি হওয়ার লক্ষণগুলো জেনে নেই।

  • ঘন ঘন পেটে ব্যথা হওয়া।
  • বমি বা কাশি হওয়া।
  • বমি বমি ভাব হওয়া বা বমি করা।
  • ওজন কমে যাওয়া।
  • মলদ্বারে চুলকানি হওয়া।
  • ঘুমের পরিমাণ কমে যাওয়া।
  • খাবার হজম না হওয়া।
  • খাওয়ার রুচি কমে যাওয়া।
  • রক্তশূন্যতা দেখা দেওয়া।
  • খিটখিটে আচরণ বা মেজাজ বেড়ে যাওয়া।
  • অপুষ্টিতে ভোগা।
  • বাচ্চার বৃদ্ধি ব্যাহত থাকা।
  • পেট ফাঁপা ও ডায়রিয়া হওয়া।
  • জ্বর ও জন্ডিস হতে পারে।
  • কোষ্ঠকাঠিন্য ও আচরণগত পরিবর্তন দেখা দেবে ইত্যাদি।

আরো পড়ুনঃ পাইলস এর এলোপ্যাথিক ঔষধের নাম

উপরে উল্লেখিত লক্ষণ গুলো যদি আপনি আপনার বাচ্চার মধ্য দেখতে পান। তাহলে ধরেই নেবেন যে তার কৃমি হয়েছে। এক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন এবং কৃমির জন্য ঔষধ সেবন করবে। এই জন্য আপনাকে শিশুদের কৃমির ঔষধ এর নাম সম্পর্কে জানতে হবে এবং শিশুদের কৃমির ঔষধ খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে হবে। যা আপনারা পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে জানতে পারবেন। তাই পড়তে থাকুন।

শিশুদের কৃমির ঔষধ এর নাম

কৃমির জন্য বর্তমানে বাজারে বিভিন্ন ধরনের ওষুধ পাওয়া যায়। তবে সবগুলো ওষুধই শিশুদের জন্য নয়। শিশুদের জন্য কৃমির ওষুধ বড়দের চাইতে একটু আলাদা হয়। এক্ষেত্রে ডাক্তাররা শিশুদের কৃমির জন্য যে সকল ওষুধ সাজেস্ট করে থাকে। সেই ঔষধ গুলোর একটি তালিকা নিচে তুলে ধরা হলো। যাতে করে আপনারা আপনাদের বাচ্চাদেরকে সেই ওষুধগুলো খাওয়াতে পারেন। শিশুদের কৃমির ঔষধ এর নাম গুলো হলো-

  • ডিলেনটিন (Delentin)
  • মেলফিন (Melphin)
  • সোলাস সাসপেনশন (Solas Suspension)
  • আলবেন (Alben)
  • পাইরান্টেল পামোয়েট
  • মেবেনডাজোল সিরাপ
  • অ্যালবেনডাজোল ইত্যাদি

উপরে উল্লেখিত ঔষধ গুলো ছাড়াও কৃমির জন্য বাজারে আরো অনেক ধরনের ওষুধ পাওয়া যায়। তবে উপরে উল্লেখিত ঔষধ গুলো শুধু বাচ্চাদের জন্য। এছাড়াও আরো কিছু ওষুধ রয়েছে যেমন Almex Tablet, Albezen Tablet, Estazol Tablet ইত্যাদি এগুলো সাধারণত বড়দের জন্য। তবে ওষুধগুলো সেবন করার পূর্বে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেবেন। 

আরো পড়ুনঃ পাইলস এর ঔষধি গাছ

আমরা এতক্ষণ তো শিশুদের কৃমির ঔষধের নাম জানলাম। কিন্তু এর নিয়মগুলো তো জানা দরকার। তাই আমরা নিচের দিকে শিশুদের কৃমির ঔষধ খাওয়ার নিয়ম গুলো আলোচনা করবো। জানতে চাইলে পড়তে থাকুন।

বাচ্চাদের কৃমির ঔষধ কোনটা ভালো

উপরের অংশটিতে আমরা শিশুদের কৃমির ওষুধের নাম গুলো তুলে ধরেছি। ঔষধের নাম গুলো আপনারা হয়তো জেনে গেছেন। এখন প্রশ্ন হচ্ছে বাচ্চাদের কৃমির ঔষধ কোনটা ভালো। আসলে উপরে উল্লেখিত ওষুধগুলোর মধ্যে সবগুলো ওষুধই বাচ্চাদের কৃমির জন্য ভালো। তবে নির্দিষ্ট করে কোন একটি ওষুধকে ভালো বলা যাচ্ছে না। কারণ একেক ধরনের শরীরে একেক ধরনের ওষুধ একেক ভাবে কাজ করে। যার ফলে নির্দিষ্ট করে কোন ঔষধ ভালো কিনা সেটা বলা মুশকিল। তবে উপরে উল্লেখিত সবগুলো ঔষধি বাচ্চাদের কৃমির জন্য ভালো। এখন চলুন শিশুদের কৃমির ঔষধ খাওয়ার নিয়ম জেনে নেই।

শিশুদের কৃমির ঔষধ খাওয়ার নিয়ম

উপরের অংশটিতে আমরা শিশুদের কৃমির ঔষধের নাম গুলো তুলে ধরেছি। এখন আমরা সেই শিশুদের কৃমির ঔষধ খাওয়ার নিয়ম গুলো আপনাদেরকে জানিয়ে দেবো। আসলে সকল ধরনের ওষুধের মতোই কৃমির ঔষধ খাওয়ারও কিছু নিয়ম রয়েছে। যেই নিয়ম গুলো না মেনে খেলে আপনার শিশুর হতে পারে বড় কোনো সমস্যা। তাই শিশুদের কৃমির ঔষধ খাওয়ার নিয়ম গুলো জানা উচিত। চলুন তাহলে শিশুদের কৃমির ঔষধ খাওয়ার নিয়ম গুলো জেনে নেই।

ডিলেনটিন (Delentin) খাওয়ার নিয়মঃ ডিলেনটিন ঔষধটি রেনেটা কোম্পানির একটি ঔষধ। এটি একটি সিরাপ জাতীয় ঔষধ। এটি যে সকল বাচ্চাদের ছয় মাসের উপরে বয়স তাদেরকে খাওয়াতে হবে। ছয় মাসের নিচে বাচ্চাদের খাওয়ানো যাবে না। এই ওষুধটি সব ধরনের কৃমির জন্য দূর করতে সক্ষম। এক্ষেত্রে যাদের বয়স ৬ থেকে ৯ মাস সেই সকল শিশুদেরকে এই ওষুধটি ১ চামচের ৪ ভাগের ১ ভাগ খাওয়াতে হবে। আর যে সকল শহীদের বয়স ১০ মাস থেকে ৪ বছর তাদেরকে এই ঔষধটি ১/২ চামচ খাওয়াতে হবে। আর যাদের বয়স ৪ থেকে ৬ বছর সেই শিশুদেরকে এই ঔষধটি পৌনে এক চামচ করে খাওয়াতে হবে।

আরো পড়ুনঃ কি খেলে পাইলস ভালো হয়

মেলফিন (Melphin) খাওয়ার নিয়মঃ এই ওষুধটিও রেনেটা কোম্পানির একটি ওষুধ। এই ওষুধটি ৬ মাসের উপরে বাচ্চাদেরকে খাওয়াতে হবে। এক্ষেত্রে যাদের বয়স ৬ থেকে ৯ মাস সেই সকল শিশুদেরকে এই ওষুধটি ১ চামচের ৪ ভাগের ১ ভাগ খাওয়াতে হবে। আর যে সকল শহীদের বয়স ১০ মাস থেকে ৪ বছর তাদেরকে এই ঔষধটি ১/২ চামচ খাওয়াতে হবে। আর যাদের বয়স ৪ থেকে ৬ বছর সেই শিশুদেরকে এই ঔষধটি পৌনে এক চামচ করে খাওয়াতে হবে।

সোলাস সাসপেনশন (Solas Suspension) খাওয়ার নিয়মঃ এই ওষুধটি দুই বছরের নিচে বয়স এমন শিশুদেরকে খাওয়ানো যাবে না। দুই বছরের উপরে যে সকল শিশুর বয়স তাদেরকে এই ওষুধটি খাওয়াতে হবে। এই ওষুধটি খাওয়ার নিয়ম হলো সকালে এক চামচ এবং রাতে এক চামচ খালি পেটে অথবা ভরা পেটে এভাবে মোট তিন দিন খাওয়াতে হবে। এই ঔষধিটি গুড়া কৃমিরি মারতে পারে।

আলবেন (Alben) খাওয়ার নিয়মঃ এই ওষুধটি যে সকল বাচ্চাদের বয়স দুই বছরের নিচে তাদেরকে খাওয়ানো যাবে না। এই ওষুধটি সব ধরনের কৃমরি মারতে সহায়তা করে। এই ওষুধটি কি খাওয়ার নিয়ম হলো সাত দিন পর পর এক চামচ করে খাওয়াতে হবে। তবে অবশ্যই যে সকল বাচ্চাদের বয়স দুই বছরের উপরে তাদেরকে খাওয়াতে হবে।

পাইরান্টেল পামোয়েট খাওয়ার নিয়মঃ এই ঔষধটি এক বছরের বেশি বয়সী শিশুদেরকে এক চামচ করে দুই সপ্তাহ পর পর খাওয়াতে হবে। এই ওষুধটি পেটের সকল ধরনের কৃমরি মারতে সহায়তা করে।

মেবেনডাজোল সিরাপ খাওয়ার নিয়মঃ এই ওষুধটি যে সকল বাচ্চাদের বয়স দুই বছরের বেশি সেই সকল শিশুদেরকে ১ চামচ করে দিনে দুইবার পর পর ৩ দিন খাওয়াতে হবে। এই ওষুধটি কেউ সকল ধরনের কৃমির মারতে সহায়তা করে।

অ্যালবেনডাজোল সিরাপ খাওয়ার নিয়মঃ যে সকল বাচ্চাদের বয়স তিন থেকে পাঁচ বছর তাদেরকে এই ওষুধটি এক চামচ করে দিনে দুইবার পরপর তিনদিন খাওয়াতে হবে। এভাবে তিন দিন খাওয়ালে কৃমির থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে ইত্যাদি।

এছাড়া বাজারে আরো অনেক ধরনের ঔষধ রয়েছে। যেগুলো কৃমির দূর করতে সক্ষম। তবে বাচ্চাদের জন্য এই ওষুধ গুলোই বর্তমানে বেশি জনপ্রিয়। আর একটা কথা-যে কোন ওষুধ খাওয়ানোর পূর্বে অবশ্যই আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন তারপরে ওষুধ খাওয়াবেন। আশা করছি বুঝতে পেরেছেন। এখন চলুন বাচ্চাদের কৃমি তাড়ানোর ঘরোয়া উপায় গুলো জেনে নেই।

আরো পড়ুনঃ গর্ভবতী হওয়ার ১ম সপ্তাহের লক্ষণ

বাচ্চাদের কৃমি তাড়ানোর ঘরোয়া উপায়

বাচ্চাদের পেটে কৃমি হবে এটি খুবই সাধারণ একটি ঘটনা। অল্প বয়সে বাচ্চাদের পেটে এমন সমস্যা হয়। তবে এই সমস্যাকে কখনোই ছোট করে দেখা উচিত হবে না। কারণ কৃমিতে আক্রান্ত হলে বাচ্চারা খুবই তাড়াতাড়ি অসুস্থ হয়ে যায়। তাই এর জন্য দ্রুত চিকিৎসা করানো উচিত। ডাক্তাররা সাধারণত একদম কম বয়সী শিশুদের কৃমির ওষুধ দেয় না। তবে আপনারা কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি ব্যবহার করে বাচ্চাদের কৃমি তাড়াতে পারবেন। বাচ্চাদের কৃমি তাড়ানোর ঘরোয়া উপায় গুলো কি তা জেনে নিন।

লেবুর বিচি

বাচ্চাদের পেটে কৃমি দূর করতে লেবুর বিচি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এক্ষেত্রে লেবুর ভিত্তি কিভাবে খাওয়াবেন। এটি খাওয়ানোর জন্য প্রথমে কয়েকটি লেবুর বিচি সংগ্রহ করবেন। তারপরে সেই বিচিগুলো রোদে শুকিয়ে গুড়া করে নেবেন। এরপর সেই গুঁড়াগুলো মধু বা মিষ্টি কোন খাবার দিয়ে খাওয়াতে পারেন। এতে বাচ্চার পেটের কৃমি দূর হয়ে যাবে।

কাঁচা পেঁপে

কাঁচা পেঁপের মধ্যে পাপাইন নামক এনজাইম উপাদান রয়েছে। যা কৃমি দূর করতে অনেক সাহায্য করে। তাই আপনি আপনার শিশুকে কাঁচা পেঁপে খাওয়াতে পারেন।

রসুন

রসুন পেটের কৃমি দূর করতে সাহায্য করে। এটিকে প্রাকৃতিক কৃমিনাশক এজেন্টও বলা হয়। কারণ রসুন পেটের কৃমি দূর করতে সক্ষম। প্রতিদিন সকালে দুই থেকে তিন কোয়া রসুন যদি আপনার শিশুকে খাওয়াতে পারেন। তাহলে খুব তাড়াতাড়ি কৃমি দূর হয়ে যাবে।

মিষ্টি কুমড়ার বিচি

কুমড়া বিচিতে রয়েছে কিউকার বিটাসিন নামক উপাদান। যা কৃমি দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি খাওয়ানোর জন্য প্রথমে কিছু কুমড়া বিচি সংগ্রহ করবেন। তারপর সেই বিটিগুলো শুকিয়ে গুড়া করে নিবেন। এরপর সেই ঘোড়াগুলো তিনকাপ পরিমাণ পানিতে আধাঘন্টা সিদ্ধ করে একটি পাচন তৈরি করবেন। এরপর সেই পাঁচজন এক সপ্তাহ খেলে কৃমি দূর হয়ে যাবে।

করলা

তিতা জাতীয় সকল খাবারই কৃমি দূর করতে খুবই ভাল কাজ করে। করলা অনেক তিতা হয় শিশুরা এটি খাইতে চায় না। এক্ষেত্রে আপনারা করলার সাথে মধু অথবা পানি মিশিয়ে শিশুকে খাওয়াতে পারে। এতে ভালো ফলাফল পাবেন।

গাজর

গাজরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ। যা শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এছাড়াও গাজর অন্ত্রে থাকা পরজীবীর সঙ্গে লড়াই করতে সাহায্য করে। তাই বাচ্চাদের পেটে কৃমি দূর করতে গাজর খাওয়াতে পারেন। এক্ষেত্রে গাজর আপনার শিশুকে খালি পেটে খাওয়াতে হবে।

কাঁচা হলুদ

কাঁচা হলুদ কৃমি দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এক্ষেত্রে আপনারা এক চা চামচ কাঁচা হলুদের রসের সঙ্গে এক চিমটি লবণ মিশিয়ে আপনার শিশুকে খাওয়াতে পারেন। তাহলে ভালো ফলাফল পাবেন। প্রতিদিন সকালে অবশ্যই খালি পেটে খাওয়াতে হবে।

আনারস

আনারসে প্রচুর পরিমাণে ব্রোমেলিন নামক এনজাইম থাকে। যা কৃমিকে ধ্বংস করতে সাহায্য করে। তাই বাচ্চাদের পেটে কৃমি দূর করতে নিয়মিত কয়েকদিন তাকে আনারস খেতে দিন। তাহলে খুব তাড়াতাড়ি ভালো ফলাফল পাবেন।

জিরা

বাচ্চাদের পেটে কৃমি দূর করার জন্য জিরা ব্যবহার করতে পারেন। এক্ষেত্রে জিরা গুঁড়ো করে সেই গুড়া পানি অথবা মধু কোন কিছুর সাথে মিশিয়ে বাচ্চাকে রোজ দুইবার ১/২ চামচ করে খাওয়ালে বাচ্চার পেটে কৃমি দূর হয়ে যাবে ইত্যাদি। 

আরো পড়ুনঃ আল্ট্রাসনোগ্রাম রিপোর্ট ছেলে না মেয়ে বোঝার উপায়

আশা করছি আপনারা বাচ্চাদের কৃমির তাড়ানোর ঘরোয়া উপায় গুলো সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। আপনারা চাইলে এই উপায়গুলো ব্যবহার করে বাচ্চাদের কৃমি দূর করতে পারেন। তবে বাচ্চাদের কৃমি হলে আগে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করবেন।

শেষ কথা

প্রিয় পাঠক বৃন্দ, এতক্ষণ আপনাদের সাথে শিশুদের কৃমির ঔষধ খাওয়ার নিয়ম, বাচ্চাদের কৃমি হওয়ার লক্ষণ, শিশুদের কৃমির দূর করার ঔষধের নাম ইত্যাদি বিষয়গুলো নিয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছি। আপনি যদি এই পোস্টটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ে থাকেন। তাহলে অবশ্যই এই পোস্টটি আপনার উপকারে আসবে। আসলে কৃমি খুবই সাধারণ একটি সমস্যা হলে অনেক সময় এই সাধারণ সমস্যায় বড় আকার ধারণ করতে পারে। তাই শিশুদের কৃমি হলে অবহেলা না করে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে চিকিৎসা করুন। অথবা কৃমির দূর করার ঘরোয়া উপায় গুলো অনুসরণ করুন। আশা করছি বুঝতে পেরেছেন। এই পোস্টটি পড়ে যদি আপনি উপকৃত হন তাহলে অবশ্যই এই পোস্টটি অন্যদের সাথে শেয়ার করবেন এবং তাদেরকে উপকৃত হওয়ার সুযোগ করে দেবেন। ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। ধন্যবাদ।

Share this post with your friends

See previous post See Next Post
No one has commented on this post yet
Click here to comment

Please comment according to Blogger Mamun website policy. Every comment is reviewed.

comment url